জন্মনিবন্ধন ছাড়া টাইফয়েড টিকা পাবেন শিশুরা - ডিএনসিসি

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় শিশুদের টাইফয়েড টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড়সড় স্বস্তি দিলেন কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে জন্মনিবন্ধন (Birth Registration) না থাকলেও ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরা বিনামূল্যে এই টিকা নিতে পারবে। সরাসরি টিকাকেন্দ্রে গেলেই বিশেষ উপায়ে টিকার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হবে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ডিএনসিসির নগর ভবনে টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইন নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেন ডিএনসিসির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহমুদা আলী। তাঁর এই ঘোষণায় জন্মনিবন্ধন না থাকা শিশুদের অভিভাবকেরা বেশ নিশ্চিন্ত হলেন।

 টাইফয়েড টিকা কবে ও কোথায় মিলবে এই টিকা?

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে এই টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইন, যা চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ১০টি অঞ্চলে মোট ১২ লাখেরও বেশি শিশু-কিশোরকে এই টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে: ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত (শুক্রবার ও সরকারি ছুটি বাদে মোট ১০ দিন) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে টিকা দেওয়া হবে।

স্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রে: ১৩ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত (শুক্রবার ও সরকারি ছুটি বাদে মোট ১৮ দিন) স্থায়ী ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে টিকা পাওয়া যাবে।

স্যাটেলাইট ও আউটরিচ কেন্দ্রে: ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই কেন্দ্রগুলোতে টিকা দেওয়া হবে (শুক্রবার ও সরকারি ছুটি বাদে)।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম চলবে।

 টাইফয়েড  টিকা নিতে পারবে কারা?

এই ক্যাম্পেইনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশু-কিশোর বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকার ১টি ডোজ নিতে পারবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে নবম শ্রেণী বা সমমানের সব শিক্ষার্থীরাও এই সুবিধার আওতায় আসবে।

 জন্মনিবন্ধন না থাকলে কী করবেন?

সাধারণত সরকারের নির্ধারিত ভ্যাকসিন নিবন্ধন পোর্টালে (https://www.vaxepi.gov.bd/) নিবন্ধন করতে গেলে জন্মনিবন্ধন নম্বর বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয়। কিন্তু নগরের অনেক শিশুর জন্মনিবন্ধন নেই। এ কারণেই অনেকেই টিকা না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় ছিলেন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহমুদা আলী জানান, যেসব শিশুর জন্মনিবন্ধন হয়নি, তাদের অভিভাবকেরা শিশুদের নিয়ে সরাসরি নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রে চলে যেতে পারেন।

আপনার শিশুকে নিয়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে যান। সেখানে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট কর্মীরা সার্ভারে তথ্য দিয়ে একটি বিশেষ টিকা কার্ড বের করে দেবেন। এই কার্ড দিয়ে শিশু টিকা নিতে পারবে। টাইফয়েড টিকার সার্টিফিকেটেও থাকছে তফাৎ;ন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে যারা টিকা কার্ড সংগ্রহ করবে, তাদের হলুদ রঙের টিকা সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। আর যারা জন্মনিবন্ধন ছাড়া বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে টিকা নেবে, তাদের সার্টিফিকেট হবে সবুজ রঙের।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানিয়েছেন, টাইফয়েড জ্বর থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে এই মাসব্যাপী কার্যক্রম মোট ১৮ কর্মদিবসে সম্পন্ন করা হবে। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

 টাইফয়েড টিকা এক নজরে লক্ষ্যমাত্রা

ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ মোট ১২,৯৪,০৬৯ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৭ লাখ ৬০ হাজার ৭৯০ জন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এবং ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৭৯ জন কমিউনিটির শিশু রয়েছে।

এটি অবশ্যই ঢাকা শহরের শিশুদের টাইফয়েড প্রতিরোধে একটি বড় পদক্ষেপ, যা শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন আশা জোগাবে।